Friday 2 August 2019

থাইরয়েডের সমস্যা ? সাবধান !


চিকিৎসার ক্ষেত্রে একটা মজার কথা আমি প্রায়ই শুনতে পাই - "ডাক্তারবাবু আমার কিন্তু থাইরয়েড আছে, ওষুধ দেওয়ার আগে একটু দেখে নেবেন প্লিজ"। আমি তাঁদের বলি, "হ্যাঁ আমারও থাইরয়েড আছে, আর শুধু থাইরয়েড নয়, আমার হার্ট, কিডনি, ফুসফুস, যকৃৎ প্রভৃতি, যা যা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থাকার কথা তার সবটাই আছে"। এই উত্তর শুনে অনেক সময়ই তাঁরা ঘাবড়ে যান। আসল কথাটা হল থাইরয়েড একটা গ্ল্যান্ড যা মানব শরীরে থাকারই কথা, বরং না থাকলেই আশ্চর্যের ব্যাপার। এক্ষেত্রে রুগীরা যদি একটু নির্দিষ্ট করে বলেন যে হাইপোথাইরয়েড বা হাইপারথাইরয়েড আছে তাহলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে কিছুটা সুবিধা হয় আর কি। 

অধিকাংশ ক্ষেত্রে রুগীরা বুঝতে পারেন না যে থাইরয়েডটা ঠিক কি বা কোথায় থাকে আর থাকলেও তার কার্যকারিতা কতটা। আসুন এই প্রসঙ্গে একটু আলোকপাত করা যাক।

থাইরয়েড কারে কয় ?

থাইরয়েড একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গ্ল্যান্ড যা মানবদেহে গলায় থাকে। এটি ২ ইঞ্চি মতো লম্বা এবং আকারে কতকটা প্রজাপতির মতো দেখতে হয়। এর দুটো ভাগ আছে - লেফট লোব এবং রাইট লোব, যা শ্বাসনালীর দুদিকে থাকে। এই দুটি ভাগকে একসাথে জুড়ে রাখে ইস্থমাস নামক কিছু থাইরয়েড টিস্যু।

এই থাইরয়েড থেকে দুটি হরমোন নিঃসরণ হয় যা শরীরের বিপাক প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও এই হরমোনগুলি শ্বাস প্রশ্বাস, হৃদকম্পন, ওজন, পেশীশক্তি, ঋতুচক্র, শরীরের তাপমাত্রা, কোলেস্টেরল মাত্রা, ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এই হরমোনগুলোর নাম হল - থাইরক্সিন (thyroxine) (T4) এবং ট্রাইআয়োডোথাইরোনিন (triiodothyronine) (T3)। এদের উচ্চারণে খানিক জিভের ব্যায়াম হলেও হৃদকম্পন বা পাচন  প্রক্রিয়ায় এদের ভূমিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। অর্থাৎ এদের মাত্রা বৃদ্ধি বা হ্রাসের ফলে শরীরে নানান রকমের রোগ হতে পারে। চলুন এই রোগের সম্বন্ধে জেনে নিই।

রোগবালাই

১. হাইপোথাইরয়েডিজম (hypothyroidism) : থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে যখন যথেষ্ট পরিমানে হরমোন তৈরী হয় না তখন সেই অবস্থাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলা হয়। শুধু থাইরয়েড গ্ল্যান্ড নয়, এটা পিটুইটারী গ্ল্যান্ড বা হাইপোথ্যালামাসের সমস্যার ফলেও হতে পারে। এর উপসর্গগুলি হল - ক্লান্তি, শুষ্ক ত্বক, কোষ্ঠকাঠিণ্য, শীত করা, শরীরে জল জমা হওয়া, পেশী এবং গাঁটে ব্যাথা, অবসাদ, মহিলাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হওয়া ইত্যাদি। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি, 'হাশিমোতোজ থাইরয়ডাইটিস' (hashimoto's thyroiditis) নামক একটি বিচিত্র রোগ আছে যার কারণে হাইপোথাইরয়েডিজম হতে পারে।

২. হাইপারথাইরয়েডিজম (hyperthyroidism) : এক্ষেত্রে প্রচুর পরিমানে থাইরয়েড হরমোন তৈরী হয়। হাইপোথাইরয়েডিজমের তুলনায় এটার  উপস্থিতি অনেক কম। এর উপসর্গগুলি হল- কাঁপুনি, দুর্বলতা, দ্রুত হৃদকম্পন, ক্লান্তি, গরম সহ্য করতে না পারা, ঘন ঘন মলত্যাগ, ঘাম হওয়া, ওজন হ্রাস, মনঃসংযোগে সমস্যা ইত্যাদি। হাইপারথাইরয়েডিজম হওয়ার অন্যতম কারণগুলি হল - গ্রেভস ডিজিজ, মাল্টিনডুলার গয়টার, অথবা অতিরিক্ত মাত্রায় আয়োডিন খাওয়া। 

৩. থাইরয়েড নডিউল : এই নডিউল হল ছোট ছোট মাংসপিণ্ড বা লাম্প যা থাইরয়েড গ্ল্যান্ডে দেখতে পাওয়া যায়। এগুলি এক বা একাধিক হতে পারে এবং নানান আকারের হতে পারে। তবে ভয়ের কিছু নেই কারণ এর থেকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা সাধারণত খুব কম।  তবে এই নডিউল যদি আকারে বেশ বড় হয় তাহলে বেশ কিছু উপসর্গ তৈরী হতে পারে।


কখন পরীক্ষা করবেন ?

# গর্ভাবস্থায় - গর্ভবতী মহিলাদের থাইরয়েডের পরীক্ষা করে নেওয়া খুবই জরুরি। কারণ থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে শিশুর মানসিক বিকাশে যথেষ্ট বিঘ্ন ঘটে। তাই আপনার গাইনোকোলোজিস্টের সাথে এই সংক্রান্ত আলোচনা অবশ্যই করে নেবেন।
# সার্জারির আগে - যেকোনো সার্জারির আগে থাইরয়েডের পরীক্ষা করা উচিত। থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে, সার্জারির পর রুগীর জ্ঞান ফিরতে সমস্যা হয়।

থাইরয়েডের কি কি পরীক্ষা হয় ?

# T3 এবং T4 : রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করা হয়।
# থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) : রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে TSH-এর মাত্রা বোঝা যায়। TSH-এর মাত্রা বেশি হলে হাইপোথাইরয়েডিজম এবং কম হলে হাইপারথাইরয়েডিজম ধরা হয়।
# থাইরয়েড স্ক্যান : এই পরীক্ষায় মুখের মধ্যে সামান্য রেডিওএক্টিভ আয়োডিন দেওয়া হয়। এতে থাইরয়েড গ্ল্যাণ্ডের চিত্রটা পরিষ্কার পাওয়া যায়।
# থাইরয়েড বায়োপ্সি : FNAC পরীক্ষার মাধ্যমে অর্থাৎ একটি সূচের দ্বারা সামান্য কিছু থাইরয়েড টিস্যু বের করে আনা হয়। এতে ক্যান্সার আছে কিনা বোঝা যায়।
# ইমেজিং টেস্ট : আল্ট্রাসাউন্ড, সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যান অথবা পেট (PET) স্ক্যানের মাধ্যমে থাইরয়েড ক্যান্সারের বৃদ্ধি পরীক্ষা করা হয়।

 

থাইরয়েডের চিকিৎসা

# থাইরয়েডেক্টমি : এই পদ্ধতিতে একজন শল্যচিকিৎসক আংশিক অথবা প্রয়োজন মাফিক সম্পূর্ণ থাইরয়েড গ্ল্যান্ডটা কেটে বাদ দিয়ে দেন। এই পদ্ধতিটি ক্যান্সার, গয়টার ও হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
# এন্টিথাইরয়েড ওষুধ : কিছু ওষুধ আছে যা হাইপারথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদনের গতি মন্থর করতে পারে।
# রেডিওএক্টিভ আয়োডিন : এই পদ্ধতিতে কম ডোজ দিয়ে থাইরয়েড গ্ল্যান্ড পরীক্ষা করা যায় এবং বেশি ডোজের মাধ্যমে ক্যান্সার টিস্যু ধ্বংস করা যায়।
# এক্সটার্নাল রেডিয়েশন : এই পদ্ধতিতে রেডিয়েশনের রশ্মি দিয়ে থাইরয়েডের ক্যান্সার কোষগুলি ধ্বংস করা হয়।
# থাইরয়েড হরমোন পিল : এই পিলের সাহায্যে হাইপোথাইরয়েডিজমের চিকিৎসা করা হয় এবং থাইরয়েড ক্যান্সার চিকিৎসার পরবর্তী ধাপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।


এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি জেনেসিস হাসপাতালে (Genesis Hospital) নামকরা চিকিৎসকরা বছরের পর বছর ধরে অত্যন্ত সফলভাবে থাইরয়েডের চিকিৎসা করছেন। তাঁদের সাথে এপয়েন্টমেন্টের জন্য যোগাযোগ করুন এই নম্বরে - ৮৫৮৪৮৮৩৮৮৪ / ০৩৩-৪০২২৪২৪২

#thyroidproblems #hypothyroidism #hyperthyroidism #thyroidnodule #TSH #GenesisHospitalKolkata #prescriptiontheke

Thursday 25 July 2019

এক বিস্ময়কর সত্য ঘটনা !

আট মাসের অবোধ শিশু চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে দক্ষিণের জানলা দিয়ে। পৌষের কুসুম কুসুম রোদ তার কচিবেলা ছুঁয়ে দিয়ে যায় নিরন্তর। পেঁয়াজি রঙের নরম তুলতুলে কাঁথায় অপত্য স্নেহের ওম জড়িয়ে রাখেন তার বাবা মা - শ্যামল ও কাকলি দেবনাথ। যাঁরা আদর করে ছেলের নাম রেখেছেন - শৌভিক। এমন স্নিগ্ধ টলটলে মধ্যবিত্তের সংসারে কখন যে শৌভিককে নিয়ে সময় কেটে যায় কেউ জানে না। হঠাৎ একদিন এক অপ্রত্যাশিত ঘটনায় এই নিশ্চিন্ত পরিবারে ঘনিয়ে আসে বিষাদের কালো ছায়া। 

কোনো এক বিকেলের নরম আলোয় খেলা করতে করতে শৌভিকের কাকা প্রথম খেয়াল করেন তার ডাকে শৌভিক তেমন ভাবে সাড়া দিচ্ছে না। অথচ চোখ মেলে তাকানো, কচি আঙুলে কাকার গাল ছুঁয়ে দেখা, সমস্তটাই স্বাভাবিক নিয়মে ঘটছে। শুধু ডাকার সময় শৌভিক আশ্চর্য ভাবে নিরুত্তর থাকছে। প্রথমটা অবশ্য শিশুর সরল অভিব্যক্তি ভেবে পাত্তা দেননি শ্যামল ও কাকলি। কিন্তু পরবর্তী কালে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় তাঁরা দেরি না করে পাড়ার একজন শিশু বিশেষজ্ঞর পরামর্শ নিলেন। বেরা (BERA) টেস্টের মাধ্যমে ডাক্তার নিশ্চিত করলেন যে শৌভিক প্রায় বধির। শ্যামল ও কাকলিকে তিনি অবিলম্বে একজন ই.এন.টি চিকিৎসকের সাথে দেখা করতে বললেন। একবুক কষ্ট আর মনখারাপের মেঘ নিয়ে তাঁরা দেখা করলেন একজন বিশেষজ্ঞের সাথে। বিভিন্ন পরীক্ষার পর তিনিও নিশ্চিত করলেন শৌভিকের যথেষ্ট শুনতে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর পরামর্শ মতো একটি বেসরকারী  সংস্থার দ্বারস্থ হলেন দম্পতি। সেখানে বিশেষজ্ঞের কথা অনুযায়ী তাঁরা শৌভিককে দিলেন নন ডিজিটাল হিয়ারিং এড (non digital hearing aid)। 

দেখতে দেখতে বছর দুয়েক কাটল। ততদিনে শৌভিকের ঠোঁটে আধো আধো শব্দ বুদবুদের মতো ফুটে উঠেছে। এছাড়া লিপ রীডিং করেও সে কথা বলার চেষ্টা করে চলেছে একটানা। কিন্তু সংস্থায় মূল্যায়নে দেখা গেল শৌভিক তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। তাঁদের পরামর্শে এবার শ্যামল ও কাকলি শৌভিককে ডিজিটাল হিয়ারিং এড (digital hearing aid) দিলেন। বছর দেড়েক কেটে গেল এরপর। ডিজিটাল এডে কয়েক শতাংশ উন্নতি হলেও আশানুরূপ ফল মিলল না একেবারেই। শ্যামল ও কাকলির নিরলস ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল এবার, অনিবার্যভাবেই। একমাত্র পুত্রের প্রতিবন্ধকতা ছিন্নভিন্ন করে দিতে লাগল তাঁদের হৃদয়। সমস্তটা বুঝে সংস্থার বিশেষজ্ঞ কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টেশনের (cochlear implantation) পরামর্শ দিলেন। কেটে গেল আরও দেড় বছর। ততদিনে শৌভিক একটি স্কুলে ভর্তি হয়েছে। অন্যান্য বিভাগে সামান্য অগ্রগতি হলেও ক্রমাগত পিছিয়ে পড়তে লাগল কথা বলার ক্ষেত্রে।  

উপায়ন্তর না দেখে অবশেষে তাঁরা কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টেশনের সিদ্ধান্ত নিলেন। পাঁচ বছরের শিশুকে নিয়ে অসহায়, উদ্বিগ্ন বাবা মা শেষ চেষ্টার আশায় জেনেসিস হাসপাতালের অন্যতম ই.এন.টি (E.N.T) সার্জেন ডঃ সৌমিত্র ঘোষের দ্বারস্থ হলেন। বিভিন্ন টেস্টের পর সার্জারির দিন ঠিক হল। ১২ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮ র সকালে শুরু হল কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারি। টানা সাড়ে তিন ঘন্টা সার্জারির পর অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে এল শৌভিক। ডঃ ঘোষের ইশারায় শ্যামল তাঁর ছেলেকে নাম ধরে ডাকলেন। বাবার ডাকে সাড়া দিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠল তাঁর পরম আদরের সন্তান। বাঁধ মানল না কাকলি ও শ্যামলের চোখের জলও। হাসপাতালের তৃতীয় তলে তখন আনন্দের বন্যায় ভেসে বেড়াচ্ছেন পরিবার ও আত্মীয়স্বজন। শ্যামলের কথা অনুযায়ী 'নবজন্ম' ঘটল শৌভিকের। 

পাঠকদের বলি এই গল্প শুধুমাত্র বিস্ময়কর সত্য ঘটনা নয়, শ্যামল কাকলির একমাত্র সন্তানের জীবন্ত দলিল। তাঁদের স্বপ্ন সাকার হওয়ার এক অত্যন্ত মধুর, বাস্তব চিত্র। সুতরাং বধিরতা এখন আর কোনো সমস্যাই নয়। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে ফিরে পাওয়া যেতে পারে শ্রবণ ক্ষমতা। আপনার সন্তান, পরিচিত, বা কোনো আপনজনের যদি এমনই উপসর্গ দেখা দেয় এবং কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টেশনের প্রয়োজনীয়তা পড়ে তাহলে বলব অবিলম্বে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। এই ধরণের  প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে জীবনের মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টায় জেনেসিস হাসপাতাল সর্বদা প্রস্তুত।

আমাদের সাথে যোগাযোগ করার উপায় - ৮৫৮৪৮৮৩৮৮৪ / ০৩৩ ৪০২২ ৪২৪২।
কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টেশন নিয়ে বিশদে জানতে হলে এই লিংক ক্লিক করুন - https://docs.wixstatic.com/ugd/c72522_2135963da147417890acabb3a63dc6df.pdf
ভালো থাকুন, ভালো রাখুন।




#cochlearimplant #hearingproblems #medicalarticles #ENT #GenesisHospitalKolkata #Prescriptiontheke 


Friday 28 June 2019

হার্নিয়ায় হাহাকার !


নানান রোগের মাঝে এই রোগের গুরুত্ব অপরিসীম। নাম ছোট হলেও দেশ জুড়ে বেশ বড় রকমের প্রকোপ আছে এই হার্নিয়ার। একেবারে সঠিক অংক কষে বলা না গেলেও একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে ভারতবর্ষে প্রতি বছর প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া হয়। সাধারণত ৪০ থেকে ৭০ বয়সী রুগীদের মধ্যে এর উপস্থিতি বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হল পুরুষ ও নারীর অনুপাত এক্ষেত্রে ৭:১, অর্থাৎ চল্লিশোর্ধ পুরুষরা সাবধান। আসুন এই রোগ সম্পর্কে একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

হার্নিয়া কি ?
যখন কোনো অঙ্গ বা টিস্যু পেটের অভ্যন্তরীণ পেশীর প্রাচীর বা পেরিটোনিয়াম ভেদ করে বেরিয়ে আসে তখন তাকে হার্নিয়া বলা হয়। এই পেরিটোনিয়ামের কাজ হল পেটের ভিতরে সমস্ত অঙ্গকে যথাস্থানে রাখা। কোনো কারণে এই পেশী যদি দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বা টিস্যু সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে ফোলাভাব বা লাম্প তৈরী করে। অদ্ভুত ভাবে, শোওয়ার সময় এই লাম্পটি কিন্তু দেখতে পাওয়া যায় না। অতিরিক্ত কাশি বা হাঁচি হলে এই লাম্প আবার অনুভূত হয়।

হার্নিয়ার প্রকারভেদ আছে নাকি ?
আছে বৈকি। হার্নিয়া বেশ কয়েক রকমের হয়। যেমন -

# ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া - জন্মের ঠিক আগে যে পথ দিয়ে পুরুষদের অণ্ডকোষ পেট থেকে অণ্ডকোষের থলিতে নেমে আসে বা নারীদের ক্ষেত্রে যেখানে জরায়ুর লিগামেন্ট থাকে সেই পথটিকে বলা হয় ইঙ্গুইনাল ক্যানাল। কোনো কারণে ইঙ্গুইনাল ক্যানালের পেশী দুর্বল হয়ে পড়লে অন্ত্রের কিছু অংশ সেই জায়গা ভেদ করে তলপেট থেকে কুঁচকির দিকে নেমে আসে। একেই বলা হয় ইঙ্গুইনাল হার্নিয়া। এই হার্নিয়া সাধারণত পুরুষদেরই বেশি হয়। (চিত্র-১)


# আম্বিলিকাল হার্নিয়া - নাভির কাছে মাংশপেশী দুর্বল হয়ে থাকলে, অন্ত্রের কিছু অংশ সেই দুর্বল পেশী ভেদ করে বাইরে বেরোনোর চেষ্টা করে। এই ধরণের হার্নিয়া বাইরে থেকে দেখেই বোঝা যায় এবং সাধারণত বেশ স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। নারী - পুরুষ নির্বিশেষে এই হার্নিয়া হতে পারে। (চিত্র-১)

# ফিমোরাল হার্নিয়া - ঊরুর উপর দিকে ধমনী বহনকারী ক্যানেলের ভিতর যখন অন্ত্রের কিছু অংশ প্রবেশ করে তখন তাকে ফিমোরাল হার্নিয়া বলা হয়। দেখা গেছে, মহিলাদের মধ্যে এই হার্নিয়ার উপস্থিতি বেশি, বিশেষ করে যাঁরা গর্ভবতী এবং স্থুল তাঁদের ক্ষেত্রে হার্নিয়া
উল্লেখযোগ্য। (চিত্র-১)


# হায়াটাল হার্নিয়া - পাকস্থলীর উপরের অংশ, যখন ডায়াফ্রাম (যে বড় পেশীটি বুক এবং পেটের মাঝামাঝি থাকে) ভেদ করে ওপরের দিকে অর্থাৎ খাদ্যনালীর দিকে বেরিয়ে আসে তখন তাকে হায়াটাল হার্নিয়া বলা হয়। (চিত্র-২)




# ইন্সিশানাল হার্নিয়া - পেটের পুরোনো কোনো অস্ত্রোপচারের জায়গা দিয়ে অন্ত্রের কোনো অংশ বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে তাকে ইন্সিশানাল হার্নিয়া বলা হয়। একটা উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যেতে পারে। যেমন ধরুন, আপনার পরনের জামাটি বেশ কিছু কারণে ছিঁড়ে যেতে পারে। এক - যদি কাপড় খারাপ হয়, দুই - যদি সুতো খারাপ হয় এবং তিন - যদি দর্জি খারাপ হয়। এক্ষেত্রেও কতকটা একইরকম। পুরোনো অস্ত্রোপচারের কারণে যদি পেটের পেশী দুর্বল হয়ে গিয়ে থাকে অথবা সেসময় যদি উন্নতমানের সুতো ব্যবহার না করা হয়ে থাকে এবং শল্যচিকিৎসক যদি যথেষ্ট দক্ষ না হয়ে থাকেন তবে পুরোনো পথ ধরে আবার কিন্তু অন্ত্র বেরিয়ে আসতে পারে। এছাড়া সেই জায়গায় সংক্রমণ বা অতিরিক্ত চাপের কারণেও এই হার্নিয়া হতে পারে। (চিত্র-৩)

কি কি কারণে হার্নিয়া হতে পারে ?
বেশ কিছু কারণ আছে যার ফলে হার্নিয়া হতে পারে। সেগুলো জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি এবং সেইমতো সাবধান হওয়া উচিত। যেমন - কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে টয়লেটে অতিরিক্ত সময় ব্যয় এবং চাপ দেওয়া। একটানা কাশি, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, প্রস্টেটের বৃদ্ধি, প্রস্রাবে অতিরিক্ত চাপ এবং অতিরিক্ত ওজন বা স্থুল হলেও হার্নিয়া হতে পারে। এছাড়া পেটের ভিতর তরল জমা হওয়া, ভারী ওজন তোলা, পেরিটোনিয়াল ডায়ালিসিস, অপুষ্টি, ধূমপান এবং অণ্ডকোষের সমস্যার ফলেও হার্নিয়া হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট।

উপসর্গ কি কি ?
হার্নিয়া হলে বেশ ব্যাথা বা অস্বস্তি হতে পারে। দাঁড়িয়ে থাকলে বা ভারী জিনিস তুলতে যাওয়ার সময় লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়। এছাড়া বমি বা বমিভাব থাকতে পারে। পাশাপাশি ফুলে ওঠা অংশটি অনেকটা সময় ধরে একটানা থেকে যেতে পারে বা বড় হতে পারে।

এই ধরণের সমস্যায় একেবারেই দেরি করা উচিত নয়। কারণ যত দেরি হবে ততই সমস্যা জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকবে। সুতরাং অবিলম্বে একজন দক্ষ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হয়ে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করুন। চিকিৎসকরা বলেন যে হার্নিয়ার ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে অস্ত্রোপচার করিয়ে নেওয়াই সমস্ত দিক থেকে শ্রেয়। এখানে উল্লেখযোগ্য, বহু বছর ধরে জেনেসিস হাসপাতালে, স্বনামধন্য শল্যচিকিৎসকরা অত্যন্ত সফলভাবে ও সুলভে হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার করে চলেছেন। যোগাযোগের জন্য এই নম্বরে ফোন করুন - ৮৫৮৪৮৮৩৮৮৪ / ০৩৩-৪০২২৪২৪২

#whatishernia #typesofhernia #symptomsofhernia #causesofhernia #GenesisHospitalKolkata #AsPrescribed   


Friday 21 June 2019

ছোটদের বড় রোগ


যে কোনো পরিবারে শিশুর জন্মের সাথে সাথে আনন্দের আবহ বয়ে যায় সারা বাড়ি জুড়ে। তবে এরপর থেকেই বাবা মায়েদের মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে নানারকম চিন্তা আর আশঙ্কা। কিভাবে সন্তানকে সুস্থ রাখা যায় বা যত্ন করা যায় সেই ব্যাপারে প্রায় ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড় হয়। তার অবশ্য সঙ্গত কারণ আছে বেশ। শিশুদের জন্মের পর পরই বেশ কিছু রোগের ঝুঁকি থেকে যায় যা কপালে ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। আসুন সেই সব রোগ নিয়ে একটু আলোচনা করে নিই যাতে সময় থাকতে সাবধান হওয়া যায় কারণ ছোট হলেও রোগে ছাড় নেই।


১. হাম - রুবিওলা ভাইরাসের কারণে হাম হয়। এই রোগের প্রভাবে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দেয়। এরসাধারণ উপসর্গগুলি হল মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, নাক দিয়ে জল পড়া এবং কাশি। এই উপসর্গের কারণে শিশুর শরীরে লাল লাল ফুসকুড়ি দেখা যায়।




২. হ্যান্ড, ফুট এন্ড মাউথ ডিজিজ - কক্স্যাকি ভাইরাসের (coxsackievirus) কারণে এই রোগ হয়। এই রোগে জ্বর ও গলা ব্যাথা হয়। এছাড়া হাতের তালুতে, পায়ের পাতায় ও মুখের ভিতরে ফোস্কা হয়। এর কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই তবে দিন দশেক পরে আপনিই ঠিক হয়ে যায়।




৩. ফ্লু - সাধারণত শীতকালে এই রোগ হয় এবং এর উপসর্গগুলি হল মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, কাঁপুনি, সারা শরীরে ব্যাথা ইত্যাদি। সাধারণত আপনিই সেরে যায় তবে কিছু ক্ষেত্রে নিউমোনিয়াও হতে পারে। বর্তমানে ৬ মাস বয়েসের পর থেকেই এই রোগের টিকা দেওয়া হয়।


৪. মাম্পস - এটাও একপ্রকার ভাইরাস ঘটিত রোগ। প্রথম দিকে ফ্লুয়ের উপসর্গ দেখা দিলেও পরবর্তী সময় লালা গ্রন্থি ফুলে গিয়ে প্রচন্ড ব্যাথা হয় (প্যারোটাইটিস - parotitis)। সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত ভোগায়, তবে তেমন জটিল হলে মেনিঞ্জাইটিস বা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।




৫. চিকেন পক্স - ভ্যারিসেলা (varicella) ভাইরাসের দরুণ চিকেন পক্স হয়। বর্তমানে নিয়মিত টিকাকরণের ফলে এই রোগ এখন অনেক কম। তবে অযত্নের ফলে ত্বকের সংক্রমণ বা নিউমোনিয়াও হতে পারে।




৬. রোটাভাইরাস সংক্রমণ - অনুন্নত দেশগুলিতে রোটাভাইরাসের (rotavirus) প্রকোপ বেশি দেখা যায়। এই সংক্রমণের ফলে শিশুদের জ্বর, বমি এবং ডায়ারিয়া হয়। এছাড়া পরিস্থিতি জটিল হলে শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দেয়। বর্তমানে অবশ্য নিয়মিত টিকাকরণের ফলে এই সংক্রমণের প্রভাব অনেকটাই কম।




৭. কানের সংক্রমণ - শিশুদের কানের সংক্রমণ প্রায় সাধারণ ঘটনা। ইউস্ট্যাশিয়ান টিউব, অভ্যন্তরীণ কানের সঙ্গে গলার সংযোগস্থাপন করে এবং এখানে জমা হওয়া তরলের নিকাশী ব্যবস্থার কাজ করে। কোনোভাবে এই তরল আটকে গেলে এতে জীবাণু জন্মায় যার ফলে সংক্রমণ হয়। সাধারণ উপসর্গগুলি হল কানে ব্যাথা, জ্বর, কান থেকে নিষ্ক্রমণ ইত্যাদি।


৮. জয়বাংলা - এই রোগও একরকম ভাইরাসের কারণে হয়। জয়বাংলা বা কনজাঙ্কটিভাইটিস (conjunctivitis) অত্যন্ত সংক্রামক এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত ৫ দিনেই এই রোগের উপশম হয় তবে জটিলতার ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ বাঞ্ছনীয়।



৯. ক্ৰূপ - এটি একটি অত্যন্ত সাধারণ শিশুরোগ এবং বিভিন্ন ভাইরাসের কারণে হয়। এই রোগে স্বরযন্ত্র (larynx) ও শ্বাসনালী (trachea) ফুলে যায়। এছাড়া প্রচন্ড কাশি এবং শ্বাস নেওয়ার সময় শব্দ হয়। ডাক্তারের পরামর্শে বাড়িতে রেখে স্টেরোয়েড বা ইনহেলার ব্যবহার করেও চিকিৎসা করা যায় তবে পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলে হাসপাতালে ভর্তি করাই শ্রেয়।




১০. হুপিং কাশি - বোর্ডেটেলা পারটুসিস (Bordetella pertussis) নামক এক ব্যাকটেরিয়া এই রোগের কারণ। এটা ভীষণ সংক্রামক এবং এতে শিশুদের মৃত্যুও হতে পারে। প্রথমে ঠাণ্ডা লাগার উপসর্গ দিয়ে শুরু হয় এবং পরে একটানা দমবন্ধ করা কাশি হতে থাকে। টিকাকরণই এই রোগ থেকে নিষ্কৃতি পাওয়ার একমাত্র উপায়।


উপরে উল্লিখিত অধিকাংশ রোগের টিকা আছে যা সময়মতো শিশুকে দিলে অনেক জটিলতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে যেগুলো সাধারণ রোগ অর্থাৎ একটু অনিয়মে হামেশাই হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে কিন্তু নজর এড়িয়ে গেলে চলবে না। কারণ অবহেলার ফলে সাধারণ রোগ অনেক সময়ই অসাধারণ আকার নিয়ে নানান রকম বিপদ ডেকে আনতে পারে। সুতরাং শিশুদের সাবধানে রাখুন এবং ছোটখাট সমস্যাতেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। জেনেসিস হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞের এপয়েন্টমেন্টের জন্য যোগাযোগ করুন এই নম্বরে - 8584883884 / 033 - 40224242

Tags : Common Paediatric Diseases ; Common Child Disease ; Genesis Hospital Kolkata ; Prescription Theke 

Saturday 8 June 2019

প্রস্রাবে রংবদল ! রক্তপাত নয় তো ?


মানুষের জীবনে রঙের ভূমিকা আছে প্রচুর । আর সময়ের সাথে সাথে দৈনিক জীবনের গতিতে সে রঙের পরিবর্তনও আসে । পরিবর্তন হয় ঋতুর, পরিবর্তন হয় আকাশের, এমনকি কালের ফেরে রাজনৈতিক রঙেও ঘটে যায় অদলবদল। তবে সেসব চিন্তার বিষয় নয় খুব একটা। সকালবেলায় আধোঘুম চোখে প্রকৃতির ডাকে টয়লেটে গিয়ে যদি দেখেন আপনার শরীর থেকে নিষ্কৃত জলোচ্ছাসের রঙে বদল দেখা দিয়েছে তাহলে ঘুম আপনার উড়ে যেতে বাধ্য । হলুদ হলে তাও একরকম কিন্তু তা যদি লাল বা গাঢ় বাদামি হয় এবং তার সাথে যদি সামান্য ব্যাথা অনুভব করেন তাহলে জেনে রাখুন আপনার শিরে নয়, রেচকে সংক্রান্তি । তাই বলে ঘাবড়ে গিয়ে বাড়ি মাথায় তুলে নিজের ও বাকিদের রক্তচাপ বাড়াবেন না যেন । বরং ঠান্ডা মাথায় নিচের লেখাটা পড়ে নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিন ।   

প্রস্রাবের সাথে রক্তপাতের অর্থ হল আপনার কিডনিতে কোনোরকম সমস্যা দেখা দিয়েছে অথবা মূত্রনালীতে কোনো সংক্রমণ বা সমস্যা হয়েছে। এই দুই ক্ষেত্রেই রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। চিকিৎসাশাস্ত্রে এই রোগের নাম হিমাটুরিয়া। হিমাটুরিয়া সাধারণত দু ধরণের হয় -

# যদি প্রস্রাবে রক্তপাত দেখা যায় তাহলে তাকে বলে গ্রস হিমাটুরিয়া
# খালি চোখে যদি না দেখা যায় অথচ মাইক্রোস্কোপের তলায় রক্তের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তাকে বলে মাইক্রোস্কোপিক হিমাটুরিয়া। 

কোন বয়েসে হয় ? 
হিমাটুরিয়া যে কোনো বয়েসে যে কোনো মানুষের হতে পারে। তবে আপনি যদি নিম্নলিখিত তালিকার মধ্যে পড়েন তাহলে হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। যেমন -

# যদি পারিবারিক কিডনির সমস্যা থাকে
# প্রস্টেট গ্ল্যান্ড যদি বড় হয়ে গিয়ে থাকে (পুরুষদের ক্ষেত্রে )
# অতীতে যদি কিডনিতে পাথর হয়ে থাকে
# যদি ব্যাথার ওষুধ, রক্ত পাতলা করার ওষুধ বা কোনো বিশেষ এন্টিবায়োটিক খেয়ে থাকেন
# যদি শ্রমসাধ্য ব্যায়ামের অভ্যাস থাকে অথবা
# সম্প্রতি কোনো ইনফেকশন হয়ে থাকে বা আছে, তাহলে হিমাটুরিয়া হতেই পারে। 

তবে প্রথম থেকেই ভয়ে পাথর হয়ে যাবেন না। কারণ প্রস্রাবের সাথে রক্তপাত হচ্ছে মানেই যে কিডনির সমস্যা আছে তা কিন্তু নয়। হিমাটুরিয়া হওয়ার কিছু অন্যরকম কারণ চিহ্নিত করা গেছে যেগুলো জেনে রাখা অতি আবশ্যক। 

কি কারণ হতে পারে ?
# পিরিয়ড বা মাসিক
# ভাইরাস জনিত কারণ 
# কোনো আঘাত লাগা
# মূত্রনালীতে সংক্রমণ ইত্যাদি
এছাড়াও জানিয়ে রাখি যে কিছু অতিগম্ভীর কারণও আছে যা অনায়াসেই আপনার কপালে ভাঁজ ফেলে দিতে পারে। যেমন -
# কিডনি বা মূত্রথলির ক্যান্সার
# কিডনি, প্রস্টেট বা মূত্রনালির কোনো অংশ   ফুলে যাওয়া
# পলিসিস্টিক কিডনি অর্থাৎ কিডনির ভিতর ছোট ছোট টিউমার বা সিস্ট হওয়া
# এমন কোনো রোগ যাতে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে এবং  
# সিক্ল সেল ডিজিজ

কি করে বুঝবেন বা উপসর্গ কি ?
যদি মাইক্রোস্কোপিক হিমাটুরিয়া হয়ে থাকে তাহলে হয়ত কোনোরকম উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে। তবে যদি গ্রস হিমাটুরিয়া হয়ে থাকে তাহলে প্রস্রাবের রং লাল, বাদামি বা গোলাপি হওয়ার বেশ সম্ভাবনা আছে। সুতরাং একটু খেয়াল রাখবেন প্রস্রাবের বর্ণে কোনোরকম পরিবর্তন হচ্ছে কিনা। গ্রস হিমাটুরিয়া হলে প্রস্রাবের সাথে রক্তপিণ্ডও বেরিয়ে আসতে পারে। নিঃসন্দেহে এই সমস্যা যন্ত্রণাদায়ক বটে। 

সুতরাং আপনার প্রস্রাবে এমন কিছু যদি লক্ষ্য করে থাকেন তাহলে সত্বর যোগাযোগ করুন একজন ইউরোলজিস্টের সাথে অথবা জেনেসিস হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগে। 

কিভাবে রোগ নির্ণয় করা হয় ?
বিভিন্ন টেস্টের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়, যেমন -
# প্রস্রাবের পরীক্ষা বা ইউরিন্যালিসিস করে শ্বেতরক্তকণিকার উপস্থিতি পাওয়া গেলে বুঝতে হবে মূত্রনালির সংক্রমণ হয়েছে।
# ডিজিটাল রেক্টাল পরীক্ষার দ্বারা জানা যায় প্রস্টাইটিস বা বিনাইন প্রস্টেটিক হাইপারপ্লাসিয়া (BPH) আছে কিনা।
# প্রস্রাবে প্রোটিন, গ্লুকোজ বা কোনো সেডিমেন্ট-এর উপস্থিতি কিডনির রোগ চিহ্নিত করে।
# সমানভাবে রক্ত পরীক্ষাও জরুরি তার কারণ রক্ত জমাট বাঁধছে কিনা সেটা ধরা পড়বে।
# এছাড়া ইমেজিং, ইউরিন সাইটোলজি এবং সিস্টোস্কপি করেও বিভিন্নভাবে রোগ নির্ণয় করা হয়। 



এর চিকিৎসা কি ?
প্রথমেই জেনে নিতে হবে যে প্রস্রাবে রক্তপাত হওয়ার সঠিক কারণটা কি। ধরুন আপনার যদি ইনফেকশনের কারণে এই রোগ হয়ে থাকে তাহলে হয়তো চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু এন্টিবায়োটিক ওষুধেই কাজ দেবে এবং আপনি আগের মতোই স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারবেন। কিন্তু তা যদি না হয় তাহলে উপরোক্ত টেস্টের মাধ্যমে সঠিক কারণ জেনে নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। তেমন হলে জেনেসিস হাস্পাতাল তো আছেই।  চিন্তা কি !

Tags : Gross Haematuria ; Microscopic Haematuria ; Urinalysis ; Blood In Urine ; Urinary Tract Infection ; Genesis Hospital Kolkata ; Prescription Theke 

Tuesday 28 May 2019

লাম্প থেকে ক্যান্সার !


বিখ্যাত শল্যচিকিৎসক ডঃ চিরন্তন সরকার মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। উল্টোদিকে বসা অনকোলজিস্ট ডঃ চৌধুরী তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে চলেছেন। পশ্চিমের জানলা দিয়ে বিকেলের শেষ আলোটুকু পর্দা ভেদ করে টেবিলের ওপর রাখা একটা রিপোর্টের খাম ছুঁয়ে যাচ্ছে। ডঃ সরকার দু’হাতে মুখ ঢেকে বললেন, 'আমি জানতেই পারলাম না ! ডঃ চৌধুরী তাঁর সহকর্মীর হাত দুটি ধরে বললেন, 'শান্ত হও চিরন্তন, অকারণে নিজেকে দোষের ভাগী কোরো না। তোমার তো কিছু করার ছিল না। পেশেন্ট যদি কিছু না বলেন তুমি জানবেই বা কি করে' ? 

অশ্রুসিক্ত চোখে ডঃ সরকার ধীরে ধীরে রিপোর্টটা ব্যাগে ঢুকিয়ে নিলেন। বললেন, 'মায়ের ব্রেস্ট টিউমারটা যদি বিনাইন অবস্থাতেই ধরতে পারতাম তাহলে বোধহয় আরও অনেকটা সময় পেতাম.......'

গল্পের এটুকু পড়ে নিশ্চই বুঝতে পারছেন যে এক্ষেত্রে অনেকটাই দেরি হয়ে গেছে। নিজে চিকিৎসক হওয়া সত্বেও মায়ের ব্রেস্ট টিউমারের বিষয়ে তিনি সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ছিলেন। তার কারণ এই ধরণের বিষয়গুলি আজও মহিলারা ডাক্তারের সমক্ষে আলোচনা করতে ইতস্তত বোধ করেন, যার ফল হয় মারাত্মক। স্তনে ছোট লাম্প বা মাংসপিণ্ড হলে কিভাবে সাবধান হবেন আসুন জেনে নিই।

বিনাইন ব্রেস্ট লাম্প কি :
স্তনের টিস্যুগুলি যখন ফুলে ওঠে বা পুরু হয়ে যায় তখন তাকে ব্রেস্ট লাম্প বলে। তবে ব্রেস্ট লাম্প মানেই কিন্তু ক্যান্সার নয়। যেহেতু ক্যান্সার নয়, তাই একে বিনাইন ব্রেস্ট লাম্প বলা হয়। শরীরে হরমোনের পরিবর্তনেই ফলে অনেকেরই এই রোগটি হয়ে থাকে। সাধারণত ঋতুস্রাবের আগে বা গর্ভধারণের সময় হরমোনের পরিবর্তন হয় যার ফলে স্তনে লাম্প হতে পারে। এছাড়া কোনো আঘাত লাগলে বা স্তন্যপান করানোর সময়তেও এই সমস্যা হতে পারে।

লাম্পের রকমফের :
# ফাইব্রোএডিনোমা (Fibroadenoma) - অত্যন্ত পরিচিত এবং সাধারণ লাম্প, যা টিস্যু বৃদ্ধির কারণে হয়। সাধারণত ১৬ - ২৪ বছর বয়েসের মধ্যে হতে পারে।

# সিস্টোসারকোমা ফিলোডস টিউমার (Phyllodes tumor) - এই টিউমার হলে আগামী দিনে বেশ বড় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এটা ৪০ - ৫০ বছর বয়েসের মধ্যে হয় এবং এই টিউমার সম্পূর্ণ সরিয়ে ফেলাই বাঞ্ছনীয়।

# ফ্যাট নেক্রোসিস (Fat necrosis) - এই ধরণের লাম্প বেশ শক্ত প্রকৃতির হয়। সাধারণত কোনো আঘাত লাগলে হতে পারে। 

# স্তনের সংক্রমণ (ম্যাসটাইটিস বা এবসেস) - সাধারণত স্তন্যপানের সময় এই সংক্রমণ হতে পারে।
# ডাক্ট এক্টাশিয়া (Duct Ectasia) - ঋতুবন্ধের সময় এই সমস্যা হতে পারে। স্তনের অভ্যন্তরীণ নালী বন্ধ হয়ে গিয়ে স্তনবৃন্তের তলায় লাম্প হতে পারে। অনেক সময় রক্তপাত হতেও দেখা গেছে।


উপসর্গ :
এমন বেশ কিছু উপসর্গ আছে যা আপনি নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন যে কোনো একটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। যেমন, স্তনে বা বগলে কোনো লাম্প বা কঠিনভাব, স্তনের আকার বা আয়তনে পরিবর্তন, স্তনের ত্বকে ভাঁজ হওয়া বা কুঁচকে যাওয়া, স্তনবৃন্তের আকার বা অবস্থানে পরিবর্তন, স্তনবৃন্তের চারপাশে ফুসকুড়ি হওয়া স্তনবৃন্ত থেকে তরলের নির্গমন, স্তনের কোনো অংশে ব্যাথা হওয়া ইত্যাদি। 
   
চিকিৎসা কি ?
এর চিকিৎসা নির্ভর করছে লাম্পের ধরণের ওপর। কিছু লাম্প আছে যাদের তেমন কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না যদি না সেই লাম্পের কোনো উপসর্গ দেখা দেয় অথবা আকারে বেশ বড় হয়। তবে যে কোনো রকম লাম্প হলে প্রথমেই এফ.এন.এ.সি (FNAC - Fine Needle Aspiration Cytology) করিয়ে নেওয়া ভালো। যদি শুধুমাত্র পুঁজ জমা হয়ে থাকে তাহলে এন্টিবায়োটিকের সাহায্যে সারিয়ে তোলা সম্ভব। এছাড়া লাম্পে যদি জল জমে তাহলেও তার চিকিৎসা আছে। তবে এটা যদি ফাইব্রোএডিনোমা বা ফিলোডস টিউমার হয় তাহলে সার্জারি করিয়ে নিয়ে বায়োপসি করা উচিত। কিন্তু ক্যান্সার ধরা পড়লে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। অবশ্য, ফ্যাট নেক্রোসিস হলে, সাধারণত আপনিই মিলিয়ে যায়।


সুতরাং ব্রেস্ট লাম্প খুব সাধারণ একটা ঘটনা হলেও একে হেলাফেলা না করাই ভালো। বলা তো যায় না, যদি কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বেরোয় তাহলে কপাল চাপড়ানোর অবকাশ পাবেন না। তাই নিজের যত্ন নিন, সুস্থ থাকুন। আর উপরে উল্লিখিত কোনোরকম উপসর্গ দেখতে পেলেই অবিলম্বে যোগাযোগ করুন জেনেসিস হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। এপয়েন্টমেন্টের জন্য ফোন করুন এই নম্বরে - ০৩৩ ২৪৪২ ৪২৪২ / ৪০২২ ৪২৪২। 

Tags : Benign Breast Lump ; Fibroadenoma ; Phyllodes Tumor ; Fat Necrosis ; Duct Ectasia ; Genesis Hospital Kolkata ; Prescription Theke

Saturday 25 May 2019

স্তন্যপানের পদ্ধতিতে বিপদ !

পলাশ - ঝুমুরের বাড়িতে আজ খুশির রোশনাই। দীর্ঘ চার বছর পর ঝুমুরের কোলে এসেছে একটা মোম মোম গড়নের ফুটফুটে পুতুল। যার চোখের বিস্ময় আর কচি হাত পায়ের ছটফটানিতে গোটা বাড়ি নিশ্বাস ফেলার সময় পাচ্ছে না। এদিক ওদিক থেকে নানান রকম উপদেশ, পরামর্শে পলাশ-ঝুমুর এর মধ্যেই জেরবার হয়ে উঠেছে। কি করে কোলে নেওয়া উচিত, কেমন করে দুধ খাবে, কখন খাওয়াতে হবে, কিভাবে শোয়াতে হবে এমন নানান ফরমায়েশি বিধানে দুজনের হাঁপিয়ে ওঠার জোগাড়। 

সদ্য বাবা মায়েদের বলি, কমবেশি এমনটা হয়ত সমস্ত নবজাতকের বাড়িতেই ঘটে থাকে। অযথা ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই। বরং স্তন্যপানের সঠিক তথ্য ও পদ্ধতিগুলি জেনে নিন।

WHO-র তথ্য অনুযায়ী শিশুকে অন্তত দু’বছর পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ খাওয়ানো উচিত এবং প্রথম ছ’মাস মাতৃদুগ্ধই দেওয়া উচিত। মাতৃদুগ্ধের বিবর্তন অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়।https://parenting.firstcry.com/articles/breast-milk-colour-whats-normal-whats-not/ 

১. কোলোস্ট্রাম - হলদেটে রঙের ঘন রসের নাম কোলোস্ট্রাম, যা উচ্চ প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেলস এবং ইমিউনোগ্লোবিউলিন সমৃদ্ধ। মাতৃদুগ্ধের প্রাথমিক পর্যায় এবং শিশুর জন্মের দুই থেকে চার দিন পর্যন্ত এটা থাকে।

২. রূপান্তরমুখী দুধ - এর স্থায়িত্ব দু’সপ্তাহ মতো। এতে প্রচুর পরিমান ফ্যাট, ল্যাকটোজ, জলে দ্রাব্য ভিটামিন থাকে এবং এর ক্যালোরি কোলোস্ট্রামের থেকে বেশি হয়।

৩. পরিণত দুধ - এটি চূড়ান্ত পর্যায়ের মাতৃদুগ্ধ। এই দুধের ৯০% জল যা শিশুর শরীরে জলের মাত্রা বজায় রাখার জন্য বিশেষ প্রয়োজন। বাকি ১০% কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট, যা শিশুর বেড়ে ওঠা এবং শক্তির জন্য দরকার।

যখনই শিশুর খিদে পাবে তখনিই ওকে স্তন্যপান করান। একে বলে চাহিদা অনুযায়ী দুগ্ধপান। প্রথম কয়েক সপ্তাহ মাকে হয়ত প্রতি ২৪ ঘন্টায় ৮ থেকে ১২ বারও দুগ্ধপান করাতে হতে পারে। তাছাড়া শিশুর পাশাপাশি মায়েরও শিশুকে স্তন্যপান করানো জরুরি। এই সুবিধাগুলি নিয়ে নিচে আলোচনা করা হল।

স্তন্যপানে শিশুর সুবিধা -
# সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে উপযুক্ত পুষ্টি যোগায়
# প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
# ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে 
# পাচনতন্ত্র গড়ে তুলতে সাহায্য করে
# মায়ের সাথে বন্ধন গড়ে তোলে

স্তন্যপানে মায়ের সুবিধা -
# উপকারী হরমোন তৈরী করে
# অতিরিক্ত ক্যালোরি পোড়ায়
# অপরিকল্পিত গর্ভসঞ্চারের আশঙ্কা কমায়
# প্রসবের পরে দেহের স্থুলতা প্রতিরোধ করে
# স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে




স্তন্যপানের নির্দেশিকা 

স্তন্যপান করানোর কিছু পন্থা বা নিয়ম আছে যেগুলো মেনে চললে মা এবং শিশু দুজনেরই উপকার হয় । অনেকেই হয়ত এ বিষয়ে জানেন না যার ফলে অধিকাংশ সময়ই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। নিচে বিশদে দেওয়া হল।

সঠিক পদ্ধতি 
# শিশুর মুখ বড় করে খোলা, ঠোঁট বাইরের দিকে উল্টানো
# শিশুর চিবুক আর নাক স্তনের ওপর রাখা
# এরোলার বেশিরভাগ অংশই শিশুর মুখের মধ্যে থাকা      উচিত
# ছোট ছোট তীব্র টানের ছন্দে দুগ্ধপান
# দুধ গিলে নেওয়ার শব্দ শোনা যাবে
# প্রথম কয়েকবার দুধ টানার পরে স্তনবৃন্তে আরাম


ভুল পদ্ধতি
# শিশুর মাথা তার দেহের সাথে যখন সরলরেখায় নেই
# শিশু কেবল স্তনবৃন্ত থেকে দুধ খাচ্ছে, এরোলা মুখের মধ্যে নেই
# ছোট ছোট টানে দুগ্ধপান, স্বাভাবিক টানে নয়
# শিশুর গাল ভিতরে ঢুকে রয়েছে, মুখে কুলকুচোর শব্দ পাচ্ছেন
# দুধ গিলে নেওয়ার শব্দ নেই
# স্তনবৃন্তে সর্বক্ষণ ব্যাথা বা ফেটে যাওয়া


মনে রাখবেন, স্তন্যপান করানোর সময় আপনি যদি রিল্যাক্সড থাকেন তাহলে সহজেই শিশুর কাছে দুধ পৌঁছবে। এক্ষেত্রে হেলান দেওয়া চেয়ারে বসাটা খুব উপকারী। শিশুকে আপনার দিকে আনুন, আপনি শিশুর দিকে ঝুঁকে পড়বেন না। তাহলে আপনার ঘাড় ও কাঁধে চাপ পড়বে এবং শিশুর অবস্থানেও ক্ষতি হবে। 

খেয়াল রাখবেন শিশুর মুখে স্তনবৃন্তটি যেন সঠিকভাবে পৌঁছায়, সেজন্য আপনাকে স্তন ধরে রাখতে হতে পারে। স্তনের পাশ থেকে সি (C) - এর মতো অথবা ইউ (U) এর মতো করে ধরুন। আপনার আঙুল যেন স্তনবৃন্ত থেকে খানিকটা দূরত্বে থাকে যাতে শিশুটির স্তন্যপানে অসুবিধে না হয়। 

বিশেষ ভাবে উল্লেখ্য, বসা অবস্থায় শিশুর মাথা আপনার কনুইয়ের ভাঁজে রাখতে হবে। শিশুর নাক যেন স্তনবৃন্তের সাথে এক সরলরেখায় থাকে। 

তবে সাবধান ! সাইড-লায়িং অবস্থানে কখনোই স্তন্যপান করাবেন না। এতে শিশুর শ্বাসনালীতে দুধ ঢুকে জীবন সংশয় হতে পারে। পাশের ছবিগুলি দেখে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে। 

এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা দরকার যে, ভারত সরকারের শ্রমমন্ত্রক দ্বারা ঘোষিত এবং মেটার্নিটি বেনিফিটস অ্যাক্ট, ১৯৬১ অনুযায়ী চাকুরীজীবি মায়েরা ৬ মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি পাবেন।


এই সংক্রান্ত তথ্য বিশদে জানতে হলে যোগাযোগ করুন জেনেসিস হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞের সঙ্গে। এপয়েন্টমেন্টের জন্য ক্লিক করুন - https://www.genesishospital.co/doctors অথবা ফোন করুন এই নম্বরে - ০৩৩ ২৪৪২ ৪২৪২ / ৪০২২ ৪২৪২ 

এর পাশাপাশি আপনার কোনো জরুরি প্রশ্ন থাকলে নিচের কমেন্ট বক্সে আমাদের জানাতে পারেন। উত্তর দেবেন জেনেসিস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

Tags: how to breast feed a baby ; the right methods of breastfeeding ; breast feeding techniques ; Genesis Hospital Kolkata ;  Prescription Theke